বাংলাদেশী গবেষক বিজ্ঞানী আবু সালেহ চিকিৎসা জগতের বিস্ময়কর ক্যান্সার রোগের ওষুধ আবিষ্কার করেন। তাঁর উদ্ভাবিত ক্যান্সার ওষুধে বিস্ময়কর ভাবে অনেক মুমূর্ষ ক্যান্সারাক্রান্ত রোগীও সুস্থ হয়ে উঠেছে। আবু সালেহ বর্তমানে এপি ঔষধালয় লিঃ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত নূর মাজিদ আয়ূর্বেদিক কলেজ এন্ড হাসপাতাল বনশ্রী, ঢাকায় রিসার্চার (সাইটিন্টষ্ট) হিসেবে কর্মরত আছেন।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হওয়ার পর দেশের নানা প্রান্ত হতে ক্যান্সার আক্রান্তদের স্বজনগণ আবু সালেহ্ সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তিনি সবাইকে ওষুধ না দিয়ে মাত্র ২০ জন রোগী বাছাই করেন। যাদের অবস্থা সর্বশেষ স্টেজে- বাঁচার আশা ছিলনা এবং প্রায় প্রতিজনই ছিলেন পেলিয়াটিভ কেয়ারের মেটাষ্টেটিস রোগী। ঐ পর্যায় থেকে ১৬ জন রোগী ক্যান্সার মুক্ত হন।
ক্যান্সারগুলো হলো স্টোমাক ক্যান্সার ৪ জন, রেকটাম ক্যান্সার ৪ জন, ব্রেষ্ট ক্যান্সার ২ জন, ইউরোনারি ব্লাড ক্যান্সার ২ জন, মাল্টিপল মাইওলোমা ক্যান্সার ২ জন, টাংগ ক্যান্সার ১ জন এবং প্রোষ্টেট ক্যান্সার ১ জন। সিটি স্ক্যান, পিইটি সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এন্ডোসকপি, কলোনস্কোপি, সিস্টোস্থকপি ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে প্রায় ৮০ শতাংশ রোগীই ৫ হতে ৬ মাসের মধ্যে ক্যান্সার মুক্ত হয়েছেন আর ২০ শতাংশ রোগী ৭ হতে ৮ মাসে সুস্থ হয়েছেন।
বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীদের অবস্থাঃ
ঢাকা লালবাগের পেলিয়াটিভ কেয়ারের মেটাষ্টাটিস রোগী, বয়স ৫৮। লিভার এবং ফুসফুস ক্যান্সার। রোগীর ছেলে জানায়, বিগত ৩ মাস পূর্ব হতেই মায়ের প্রসাব- পায়খানা, খাওয়া- দাওয়া করতে কষ্ট হতো, ২ জন লাগতো সেবা-শ্রশ্রুসা এবং বিছনা হতে উঠাতে। আবু সালেহ্ ওষুধ শুরুর ৪ দিন পর হতেই তার মা একা একাই সব করতে পারছে। হাঁটছে, কথা বলছে, ঠিক যেন একজন পরিপূর্ণ সুস্থ মানুষ।
পেলিয়াটিভ কেয়ারের মেটাষ্টাটিস দ্বিতীয় রোগী খুলনা জেলার, বয়স ৩৪। রেকটাম, ফুসফুস, স্তন এবং লিভার ক্যান্সার। রোগীর স্বামী জানান, আবু সালেহ্র ওষুধে চিকিৎসা নেওয়ার ৩দিন পর হতেই উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পায়ে পানি চলে এসেছিল তা কমেছে। তীব্র ব্যাথা ছিল- এজন্য আগে যেখানে ৬ ঘন্টা পর পর ৩০ মি: গ্রা: করে মরফিন খেতে হতো এখন ১২ ঘন্টা পর পর মাত্র ১০ মি: গ্রা: করে মরফিনেই হচ্ছে। খাওয়া-দাওয়া করতে পারছে, ঘুমাতে পারছে। পেট ও বাম স্তনের টিউমার দুটো নরম ও ছোট হয়েছে। আবু সালেহ্ ওষুধ শুরু করেছে ১০ দিন বলে জানান রোগীর স্বামী।
সুস্থ হওয়া রোগীদের বর্তমান অবস্থাঃ
আবু সালেহ্র উদ্ভাবিত ক্যান্সার ওষুধে যাঁরা সুস্থ হয়েছেন, সেসব রোগী এবং তাঁদের অভিভাবকগণ জানান তারা প্রত্যেকেই এখন সুস্থ আছেন ও পেশাগত কর্ম-জীবনে ফিরে এসেছেন। লক্ষনীয় যে, ক্যান্সার হতে সুস্থ হওয়া সেসব রোগীদের প্রত্যেকের সাথে একটা বিষয়ে মিল পাওয়া গেছে যে, ওষুধ শুরুর ২ সাপ্তাহের মধ্যেই শরীরের বাজে অনুভূতি, জ্বর, ব্যাথা, ক্ষুধা-মন্দাসহ ইত্যাদি সমস্যাগুলি প্রায় ৫০ ভাগ সেরে গিয়েছিল এবং উত্তরোত্তর তাঁরা যে সুস্থ হচ্ছেন এটা বুঝতে পেরেছিলেন। সত্যিই যা চিকিৎসা জগতে মাইলফলক।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ
এনএমএসি, বিসিএসআইআর সহ স্বনামধন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপার্টমেন্ট অব ফার্মেসী, ডিপার্টমেন্ট অব বায়োকেমিস্ট্রি, ডিপার্টমেন্ট অব ফার্মাকোলজী এবং ডিপার্টমেন্ট অব মাইক্রোবায়োলজী এন্ড হাইজিন ল্যাবরেটরীগুলোতে নানাবিধ পরীক্ষা এবং দীর্ঘ গবেষণায় দেখা গেছে যে, নির্দিষ্ট মাত্রায় ওষুধটি গ্রহণে ন্যূনতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে।
যেভাবে আবু সালেহ গবেষণা চালাচ্ছেনঃ
রাষ্ট্রের আনুকল্য না পেয়ে তিনি তাঁর সীমিত সম্পদ ও সুযোগের মধ্যেই প্রতিষেধকটি নিয়ে গবেষনা চালিয়ে যেতে থাকেন এবং এনএমএসি, বিসিএসআইআর, ময়মনসিংহ ইউনিভার্সিটি এবং রাজশাহী ইউনিভার্সিটির ল্যাবরেটরীগুলোতে নানাবিধ পরীক্ষা চালাতে থাকেন এবং চমকপ্রদক সফলতাও আসতে থাকে।
উচ্চতর গবেষণার জন্য যাদের সাহায্য চেয়েছেন আবু সালেহঃ
ওষুধটি নিয়ে আরো ব্যাপক পরিসরে গবেষণার জন্যে বিজ্ঞানী আবু সালেহ্ প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করে চিঠি প্রদান করেন। এরপর অবহিত করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবগণকে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ২১/১০/১৯ তাং ৪৫.১৭০.০০১.০০.০০.০০২.২০১৪/২৭৩ নং চিঠিতে দায়িত্ব দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিচালক, মহাখালীকে। কিন্তু ১৭/১১/২০১৯ তাং: ১/২০১৫/৬৪০০/১ (১) চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালক, মহাখালী জানায় ক্যন্সার প্রতিষেধকটির গবেষণার সুযোগ তাদের নেই, এ সুবিধা আছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিঠি দুইটি সংযুক্তি করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বরাবর চিঠি দেন আবু সালেহ্। কিন্তু ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ আজ অবধি সে চিঠির উত্তর দেয়নি। অতঃপর তিনি বিসিএসআইআর এবং আইসিডিডিআরবি -কে চিঠি দেন । আইসিডিডিআরবি কর্তৃপক্ষ ফোন করে জানায় তাদের এ সুবিধা নেই। বিসিএসআইআর হতে ফোন করে জানায় চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাতের জন্য।
নির্ধারীত তারিখে আবু সালেহ্ উপস্থিত হলে চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে বিসিএসআইআর এর তিনজন সাইন্টিষ্টের উপস্থিতিতে মিটিং হয় এবং সভা শেষে তারা সিদ্ধান্তে জানান, গবেষনার যাবতীয় ব্যয়-ভার এবং প্রতিষেধকটি কিভাবে ও কোন উপাদানে তৈরি হয়েছে তা বিসিএসআইআর এর কাছে জামা দিতে হবে। গবেষণাটি শেষ হলে পেটেন্ট রাইটস এর মালিকানা থাকবে নিয়মানুযায়ী বিসিএসআইআর এর। তাঁদের এ প্রস্তাবে আবু সালেহ্ রাজী হতে পারেননি।
আবু সালেহ এর সাথে প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যাবে। মোবাইল নং ০১৯৭৩-৯৩৭৭২৭, ০১৭০৬-৮৮০৯১০